স্বদেশ প্রেম ৪টি রচনা | ৫ম শ্রেনী থেকে ১০ম প্রযন্ত সকলের জন্য (৪০০ থেকে ১০০০+ শব্দের)
Join Our Official Telegram Channel
রচনাঃ স্বদেশপ্রেম
ভূমিকাঃ
মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার নামই হল স্বদেশপ্রেম। স্বদেশ প্রতিটি মানুষের গর্ব। স্বদেশের প্রতিটি ধূলিকণা প্রতিটি মানুষের কাছে সোনার মত। স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। জননীর মতই জন্মভূমি প্রতিটি মানুষের কাছে প্রিয়। যাকে ভালোবাসার কথা শিখতে হয় না। “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।”
স্বদেশপ্রেম বলতে যা বুঝায়ঃ
স্বদেশ মানে নিজের দেশ। স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা বা স্বদেশেপ্রেম বলতে বুঝায় দেশের প্রতি, জাতির প্রতি, দেশের ভাষার প্রতি, সংস্কৃতির প্রতি, প্রতিটি মানুষের প্রতি ভারোবাসার তীব্র আকর্ষণ।
দেশের প্রতি গভীর অনুরাগ, নিবিড় ভালোবাসা এবং যথার্থ আনুগত্যকেই স্বদেশেপ্রেম বলে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন— “দেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ।” দেশ প্রেমিকদের মতে জন্মভূমি স্বর্গ থেকে শ্রেষ্ঠ।
স্বদেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশঃ
স্বদেশের প্রতি আমাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রকাশ পায় স্বদেশের বিপর্যয় মুহূর্তে। স্বদেশের পরাধীনতায়, স্বদেশের উপর শত্রুদের হামলায়। স্বদেশের মুখে কলঙ্ক আরোপের সে সংকটক্ষণে স্বদেশপ্রীতির অভিব্যক্তি পরিণত রূপে মূর্ত হয়ে উঠে। তখনই দেশপ্রেমিকগণ স্বদেশের দুঃখ মোচনে অকাতরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নিঃশেষে প্রাণ বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকে।
ছাত্রজীবনে দেশপ্রেমের শিক্ষাঃ
ছাত্রজীবন থেকে দেশপ্রেমের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশকে প্রাণের চেয়ে প্রিয় ও পবিত্র ভাবতে হবে। তাহলেই দেশকে ভালোবাসার দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার মনোবৃত্তির উন্মেষ ঘটবে।
দেশপ্রেমের মহিমাঃ
দেশপ্রেমের ফলে মানুষের মন উদার ও মহৎ হয়। দেশপ্রেমের মাধ্যমেই মানুষের মনে অপরের জন্য কল্যাণবোধ জাগ্রত হয়। প্রকৃত দেশপ্রেমিক দেশকে অতিক্রম করে বিশ্বজনীন মহৎ প্রাণে পরিণত হয়।
দেশ প্রেমিকের উদাহরণঃ
এ বিশ্বকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন যাঁরা তারা হলেন সত্যিকার দেশপ্রেমিক। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এদের মধ্যে অন্যতম। তিনি শুধু তাঁর দেশের মানুষকে নয় সমগ্র বিশ্ববাসীকে অন্ধকার জগত থেকে আলোর জগতে এনেছেন। এছাড়া ও ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে। শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী। সোহরাওয়ার্দী ও তিতুমীর আরো অনেক লোক।
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায়, দেশ প্রেম মানব জীবনের একটি শ্রেষ্ঠ গুণ। দেশ প্রেমের মূল লক্ষ দেশের মানুষকে ভালোবাসা। দেশ ও জাতির স্বার্থে ও কল্যাণে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখা প্রতিটি দেশ প্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রচনাঃ স্বদেশপ্রেম
ভূমিকাঃ
স্বদেশপ্রেম জন্মভূমির জন্যে মানুষের একধরনের অনুরাগময় ভাবাবেগ। স্বদেশপ্রেম বলতে বোঝায়
নিজের জন্মভূমিকে ভালোবাসা। জন্মসূত্রে জন্মভূমির সঙ্গেই গড়ে ওঠে মানুষের নাড়ির যোগ। স্বদেশের জন্যে তার মনে জন্ম নেয় নিবিড় ভালোবাসা। এই অনন্য ভালোবাসাই হচ্ছে স্বদেশপ্রেম।
স্বদেশপ্রেমের স্বরূপঃ
জন্মভূমির মাটি, আলো-বাতাস, অন্ন-জলের প্রতি মানুষের মমত্ব অপরিসীম। জন্মভূমির ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিবেশের প্রতি থাকে তার একধরনের আবেগময় অনুরাগ। জন্মভূমির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সঙ্গে গড়ে ওঠে তার শেকড়ের বন্ধন।
স্বদেশের প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি এই অনুরাগ ও বন্ধনের নাম স্বদেশপ্রেম। মা, মাতৃভূমি আর মাতৃভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসার আবেগময়
প্রকাশ ঘটে স্বদেশপ্রেমের মধ্যে। সেই তীব্র আবেগের
পরিচয় আমরা পাই রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ বন্দনায়:
‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম মা গো, তোমায় ভালোবেসে।
স্বদেশপ্রেম মানুষের অন্তরে সদা বহমান থাকে। বিশেষ সময়ে, বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে তা আবেগউদ্বেল হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ শাসনামলে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও সুকান্তের দেশাত্মবোধক গানে-কবিতায় স্বদেশপ্রেমের আবেগময় প্রকাশ দেখা যায়।
১৯৩০-এ মাস্টারদা-র নেতৃত্বে চট্টগ্রাম যুব-বিদ্রোহ স্বদেশপ্রেমেরই বলিষ্ঠ প্রকাশ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে স্বদেশপ্রেমের চূড়ান্ত অভিব্যক্তি ঘটেছে। স্বদেশপ্রেম দেশ ও জাতির অগ্রগতির লক্ষ্যে জ্বলন্ত প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে একপ্রাণ হয়ে মহৎ লক্ষ্য সাধনে ব্রতী করে।
স্বদেশপ্রেমের ভিন্নতর বহিঃপ্রকাশঃ
কেবল স্বাধীনতা অর্জন কিংবা স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামেই দেশপ্রেম সীমাবদ্ধ থাকে না, দেশকে সমৃদ্ধিশালী করাতে ও স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তি ঘটে। শিল্প-সাহিত্য চর্চায় কিংবা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনায় স্বদেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
দেশের কল্যাণ ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে, বিশ্বসভ্যতায় অবদান রেখে বিশ্বসভায় দেশের গৌরব বাড়ানো যায়। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জগদীশচন্দ্র বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এফ আর খান, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রমুখের অবদানে বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
স্বদেশপ্রেমের বিকৃত রূপঃ
স্বদেশপ্রেম পবিত্র। তা দেশ ও জাতির জন্যে গৌরবের। কিন্তু উগ্র ও অন্ধ স্বদেশপ্রেম কল্যাণের পরিবর্তে রচনা করে ধ্বংসের পথ। অন্ধ স্বদেশপ্রেম উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয়।
তা জাতিতে জাতিতে সংঘাত ও সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জার্মানিতে হিটলার ও ইতালিতে মুসোলিনি উগ্র জাতীয়তা ও অন্ধ দেশপ্রেমের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিল। তার ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লাখ লাখ লোকের মৃত্যু ঘটেছিল । বিপন্ন হয়েছিল বিশ্বমানবতা।
স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমঃ
স্বদেশপ্রেম বিশ্বপ্রেমেরই একটি অংশ। দেশকে ভালোবেসে মানুষ বিশ্বকে ভালোবাসতে পারে। তাই প্রকৃত স্বদেশপ্রেম কখনো বিশ্বপ্রেমের পথে বাধা হতে পারে না। বস্তুত, বিশ্বমায়ের বুকের আঁচলের ওপর দেশজননীর ঠাঁই ।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর অমর বাণীতে বলে গেছেন সে কথা...........
"ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা
তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।"
দেশপ্রেমের উজ্জ্বল প্রতিভূঃ অনন্য দেশপ্রেমের অনেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে দেশে দেশে। সারা বিশ্বের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত তাঁরা। উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদান রেখেছেন অনেক বাঙালি।
তাঁদের মধ্যে নেতাজি সুভাষ বসু, চিত্তরঞ্জন দাস, এ. কে. ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী, প্রমুখ চিরদিন আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবেন। বিশ্বের দেশে দেশে বহু রাষ্ট্রনায়ক দেশ ও জাতিকে নবচেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন।
ইতালির গ্যারিবান্ডি, আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন, রাশিয়ার লেনিন, চিনের মাও সে তুং, ভিয়েতনামের হো চি মিন, তুরস্কের মোস্তফা কামাল পাশা, ভারতের মহাত্মা গান্ধী এবং বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ রচনা করেছেন দেশপ্রেমের অমরগাথা।
উপসংহারঃ
স্বদেশপ্রেম এক জ্বলন্ত মহৎ প্রেরণা। সে প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা ব্যক্তিগত স্বার্থচেতনার
ঊর্ধ্বে উঠি৷ যুক্ত হই সমষ্টির কল্যাণচেতনায়। দেশের সংকটে ঐক্যবদ্ধ হই। সর্ব অমঙ্গল থেকে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হই। দেশের উন্নতি ও অগ্রগতিতে সাধ্যমতো অবদান রাখি। স্বদেশপ্রেমের ভেতর দিয়েই আমরা বিশ্বপ্রেমের সেতুবন্ধ রচনা করতে পারি।
রচনাঃ স্বদেশপ্রেম
ভূমিকাঃ
পৃথিবী মানুষের জন্মস্থান। সেই অর্থে পৃথিবীই প্রত্যেকের জন্মভূমি। তবু ঠিক যে-স্থানে, যে-দেশে তার জন্ম, সেস্থানের সঙ্গে তার নাড়ির সম্পর্ক। সেখানেই সে মাকে পায়। সেই স্থান তার মাতৃভূমি। তাই সে ভালোবাসে— মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে।
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেছেন: ‘মাতা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষা আমাদের কাছে সর্বাপেক্ষা মূল্যবান।' অনুরূপ সংস্কৃত শ্লোকে বলা হয়, ‘জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপী গরীয়সী’— অর্থাৎ মা ও মাতৃভূমি স্বর্গের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তাই প্রত্যেক মানুষ নিজেকে ভালোবাসে। আবার নিজের চেয়ে নিজ দেশকে বেশি ভালোবাসে।
ইংরেজ কবি বলেন- ‘I love my life, but not more than my country.' স্বদেশকে ভালোবাসা মানুষের জন্মগত গুণ। স্বদেশকে ভালোবেসে যুগে যুগে অনেক বীর যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ তেমনি দেশপ্রেমের এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত।
দেশপ্রেমের স্বরূপঃ
দেশের প্রতি গভীর অনুরাগ, নিবিড় ভালোবাসা ও যথার্থ আনুগত্যকেই বলা হয় দেশপ্রেম। দেশপ্রেম মানুষের সহজাত চেতনা। স্বদেশের প্রতি আমৃত্যু থাকে প্রবল আকর্ষণ। স্বদেশের মাটি, প্রকৃতি, নদনদী, নিসর্গ, ইতিহাস, ঐতিহ্য সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড় বন্ধন তৈরি হয়।
হৃদয়ে লালিত হয় অন্তরঙ্গ প্রেম। তাই মায়ের পরই মাতৃভূমিকে স্থান দেয় মানুষ। স্বদেশের বিজয়ে উল্লসিত হয়, স্বদেশের সংকটে নিজ জীবন বাজি রেখে সেই সংকট অতিক্রম করতে দৃঢ় শপথ গ্রহণ করে। সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবোধ স্বদেশপ্রেমের প্রধান উৎস।
দেশপ্রেমের উন্মেষ ও দেশপ্রেমিকের জীবনঃ
সব প্রাণীই তার আবাসস্থলকে ভালোবাসে। মানুষও ভালোবাসে তার জন্মভূমি। তবে মানুষের মনে দেশপ্রেমের উন্মেষ হয় বিদেশে অবস্থানকালে, আর দেশের সংকটকালে। সংকট অতিক্রম করতে সংগ্রামী হয়ে ওঠে মানুষ। যুদ্ধে অকাতরে জীবনদান করে। কবির ভাষায়.........
জন্মভূমি রক্ষা হেতু কে ডরে মরিতে?
যে ডরে, ভীরু সে মূঢ়; শত ধিক্ তারে!
কিংবা, বিদেশে অবস্থানকালে দেশের প্রতি প্রবল টান অনুভব করা যায়। তাই কবি ঈশ্বর গুপ্ত বলেন.....
"স্বদেশের প্রেম যত, সেই মাত্র অবগত
বিদেশেতে অধিবাস যার।"
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশসেবার মানসিক শক্তি যার আছে, তার মধ্যে কোনো সংকীর্ণতা থাকে না। থাকে না কোনো প্রকার ভয়ভীতি। দেশসেবার পথে পথে সাজানো থাকে মৃত্যুর তোরণদ্বার। থাকে পথে পথে বাধাবিপত্তি। মৃত্যুর গর্জন তার কানে বাজে সংগীতের মতো। কবির ভাষায়........
উদয়ের পথে শুনি কার বাণী
ভয় নাই ওরে ভয় নাই
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।
প্রকৃত দেশপ্রেমিক মৃত্যুর পরও মৃত্যুঞ্জয়ীরূপে সমাদৃত হতে থাকেন। মহাত্মা গান্ধী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
স্বদেশপ্রেমের অনুভূতি জীবনে ও সাহিত্যেঃ
স্বদেশপ্রেমের এই মধুর অনুভূতির প্রকাশ পায় সাহিত্যে ও সংগীতে। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশের রয়েছে নিজস্ব সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক স্বরূপ। বাংলা সাহিত্যে কবিতা ও সংগীত স্বদেশের বন্দনায় মুখরিত।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ স্বদেশপ্রেমের মন্ত্রে উদ্দীপিত হয়ে লিখেছেন......
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
আবার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন ......
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি—
তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।
দেশপ্রেমের ভিন্নরূপঃ
উগ্র দেশপ্রেম আবার ক্ষতির কারণ। যদি জাতির গৌরব প্রতিশোধপরায়ণ ও হিংসারূপে প্রকাশ পায় তবে দেশপ্রেমের মহিমা ম্লান হয়ে যায়। জার্মান সম্রাট হিটলার উগ্র জাতীয়তাবাদী নেতা। তাঁর দেশপ্রেমকে ভিন্নরূপে দেখা হয়। অন্যদিকে ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কেও কেউ-কেউ এই ধারণা পোষণ করে। যাই হোক, উগ্র জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেম মঙ্গলের চেয়ে বেশি অমঙ্গল সাধন করে।
দেশপ্রেমিক ব্যক্তিত্বঃ
দেশপ্রেমের মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অনেক বরণীয় ব্যক্তিত্ব। উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক বাঙালি অসামান্য অবদান রেখেছেন। এঁদের মধ্যে নেতাজী সুভাষচন্দ্র, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় হয়ে আছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা এবং জাতির পিতা। অনুরূপ ইতালির গ্যারিবল্ডি, আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন, রাশিয়ার লেনিন, চীনের মাও সে তুং, তুরস্কের কামাল পাশা, ভিয়েতনামের হো চি মিন, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, প্যালেস্টাইনের ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ পৃথিবীর মহান দেশপ্রেমিক ও অমরপ্রাণ মানুষ।
উপসংহারঃ
স্বদেশপ্রেম মানুষের অন্যতম পবিত্র গুণাবলি। দেশপ্রেম সম্পর্কে হযরত মহম্মদ (স) বলেছেনঃ ‘হুযবল ওয়াতন মিনাল ঈমান'— অর্থাৎ দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ। নিজের দেশের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পালন ও ভালোবাসা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক কাজ।
রচনাঃ স্বদেশপ্রেম
“সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালবেসে॥”
---রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--
ভূমিকাঃ
যে দেশ আলো দিল, মুখে দিল অন্নজল, দিল পরনের বস্ত্র, তার প্রতি যদি সেই দেশের শ্যামলস্নেহে প্রতিপালিত সন্তানদের ভালোবাসা না থাকে, তবে তারা কেবল অকৃতজ্ঞই নয়— অধম। স্বদেশের মানুষ, স্বদেশের রূপ-প্রকৃতি, তার পশুপাখি, প্রতিটি ধূলিকণা তার সন্তানদের কাছে প্রিয়, পরম পবিত্র।
দেশমাতৃকার মৃন্ময়ী মূর্তি কেবল কাদা-মাটি-জলে নির্মিত প্রতিমা মাত্রই নয়, হৃদয়ের নিবিড় ভালোবাসায় এবং গভীর মমত্ববোধে সে সন্তানের অন্তরের অন্তঃস্থলে পরিগ্রহ করে চির আরাধ্য চিন্ময়ী মূর্তি। স্বদেশের কাছে মানুষ সকল দিক দিয়েই ঋণী। স্বদেশপ্রেম সেই ঋণ-স্বীকার ও ঋণ শোধের উপায়মাত্র।
স্বদেশপ্রেম কিঃ
যে ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিবেশের মধ্যে মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং বড় হয়ে ওঠে; তার প্রতি, সেখানকার মানুষের প্রতি তার একটা স্বাভাবিক আন্তর আকর্ষণ গড়ে ওঠে। স্বদেশের পশুপাখি, তরুলতা থেকে শুরু করে তার প্রতিটি ধূলিকণা পর্যন্ত তার পরম কামনার ধন।
সে তখন আবেগবিহ্বল কণ্ঠে গেয়ে ওঠে— “আমার এই দেশেতেই জন্ম যেন এই দেশেতেই মরি।” দেশের প্রতি এই আজন্ম আকর্ষণ থেকেই স্বদেশপ্রেমের উন্মেষ। তখন মানুষ উপলব্ধি করে, ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।' কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস বলেছেন—
“জননী গো জন্মভূমি তোমারি পবন
দিতেছে জীবন মোরে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে।
সুন্দর শশাঙ্কমুখ, উজ্জ্বল তপন,
হেরেছি প্রথমে আমি তোমারি আকাশে।
ত্যাজিয়ে মায়ের কোল, তোমারি কোলেতে
শিখিয়াছি ধূলি-খেলা, তোমারি ধূলিতে।”
স্বদেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশঃ
স্বদেশপ্রেম মানুষের অন্তরে কখনো থাকে সুপ্ত, কখনো জাগ্রত। কিন্তু স্বদেশপ্রেমের মূল গ্রোথিত থাকে অন্তরের অন্তস্থলে। ঐক্যবদ্ধভাবে যখন দেশের সকল মানুষ একই জীবনধারায়, একই ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারায় পুষ্ট হয়ে একই আদর্শের অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে, তখনই মৃন্ময়ী দেশ হয়ে ওঠে চিন্ময়ী।
‘ফুলে ও ফসলে, কাদা-মাটি-জলে' দেশ তখন যথার্থ মাতৃভূমি হয়ে ওঠে। স্বর্গাদপি গরীয়সী জননী জন্মভূমিকে তখন সবাই সালাম দেয়; সুজলা-সুফলা, মলয়জ শীতলা, শস্য শ্যামলা দেশের তখন অভিষেক হয় জননীরূপে। মহাকবি কায়কোবাদ তাঁর 'বাংলা আমার' কবিতায় লিখেছেনঃ
“বাংলা আমার ----------- বাংলা আমার
বাংলা আমার --------------জন্মভূমি
গঙ্গা ও যমুনা------------- পদ্মা ও মেঘনা
বহিছে যাহার চরণ চুমি।”
স্বদেশপ্রেমের উন্মেষঃ
সুখের দিনে স্বদেশপ্রেম থাকে সুপ্তিময়। কিন্তু দুঃখের দিনে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়ে স্বদেশপ্রেমের হয় শুভ উদ্বোধন। পরাধীনতার দুঃখ-বেদনায়, পরদেশীয় অকথ্য নির্যাতনে অন্তরের সুপ্ত স্বদেশপ্রেমের ঘুম ভাঙে।
কিংবা দেশ যখন বিদেশি শত্রুর আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়, তখন সমগ্র জাতি স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বদেশের লাঞ্ছনা মোচন ও মর্যাদা রক্ষাকল্পে প্রাণ দেবার জন্য দলে দলে ছুটে যায়। তখন মনে হয়, “নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই, তার ক্ষয় নাই।"
দেশ-দেশান্তরের ইতিহাসই তার সাক্ষী। দলে দলে প্রাণ বিসর্জন দিতে গিয়ে কোনো কোনো দেশ হয়েছে অবীরা এবং মহিলারা জহরব্রত অনুষ্ঠান করে কিংবা জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করে রেখে গেছে স্বদেশপ্রেমের উজ্জ্বল স্বাক্ষর।
স্বদেশপ্রেমের স্বরূপঃ
দেশপ্রেমের উদ্ভব আত্মসম্ভ্রমবোধ থেকে। যে জাতির আত্মসম্ভ্রমবোধ যত প্রখর, সে জাতির স্বদেশপ্রেম তত প্রবল। স্বদেশপ্রেম এক প্রকার পরিশুদ্ধ ভাবাবেগ। নিঃস্বার্থ, হিংসাবিহীন দেশপ্রেমই প্রকৃত স্বদেশপ্রেম।
ক্ষুদ্র স্বার্থের গণ্ডি অতিক্রম করে বৃহত্তর স্বার্থের দিকে যখন মন পরিচালিত হয়, যখন আত্মকল্যাণের চেয়ে বৃহত্তর কল্যাণবোধ সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখনই জ্বলে ওঠে স্বদেশপ্রেমের নিষ্কলুষ প্রদীপশিখা। স্বদেশের মান-মর্যাদা এবং তার গৌরব রক্ষাকল্পে শহিদ হয়েছে কত অমর প্রাণ।
দেশসেবার পথে বাধা, বিস্তর, অত্যাচার সীমাহীন। কিন্তু পরদেশী শাসকের রক্তচক্ষু, উদ্যত অস্ত্র কিংবা পথের কোন বাধা তাঁদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপকে নিবৃত্ত করতে পারে না। তাঁরা মৃত্যু-ভয়কে তুচ্ছ করে এগিয়ে যায় দেশমাতৃকার ভালোবাসার টানে। তাই কবি রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায় লিখেছেনঃ
“স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে
কে বাঁচিতে চায়?
দাসত্ব শৃঙ্খল বল, কে পরিবে পায় হে
কে পরিবে পায়?”
স্বদেশপ্রেমের দৃষ্টান্তঃ
স্বদেশকে ভালোবাসতে গিয়ে যুগে যুগে বহু নেতা ও মনীষী নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। উপমহাদেশের তিতুমীর, রানা প্রতাপ, শিবাজী, ক্ষুদিরাম, প্রফুল্লচাকী, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী প্রমুখ নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন।
বাংলাদেশে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন, মতিউর রহমান, মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, মোস্তফা কামাল, মুন্সী আবদুর রব, নূর মোহাম্মদ শেখ, হামিদুর রহমান প্রমুখ অকাতরে জীবন দিয়ে দৈশপ্রেমের দৃষ্টান্ত হিসেবে অমর হয়ে আছেন।
এছাড়া শেরেবাংলা এ.কে. ফজলুল হক, আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, ভ.ই. লেনিন, মাও সেতুং, গ্যারিবন্ডি, জর্জ ওয়াশিংটন, কামাল পাশা, হো. চি. মিন, সাদ্দাম হোসেন, মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
অন্ধ স্বদেশপ্রেমঃ
স্বদেশপ্রেম দেশ ও জাতির গৌরবের বস্তু। কিন্তু অন্ধ স্বদেশপ্রেম ধারণ করে ভয়ঙ্কর রূপ, তা জাতিতে জাতিতে অনিবার্য করে তোলে সংঘাত ও সংঘর্ষ। অন্ধ স্বদেশপ্রেম কেবল স্বদেশের কথাই চিন্তা করে। আবার স্বদেশের জয়গান যদি অপরের স্বদেশপ্রেমকে আহত করে, তবে সেই অন্ধ স্বদেশপ্রেম বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে ডেকে আনে ভয়াবহ রক্তাক্ত দ্বন্দ্ব-সংঘাত।
মানুষের বক্ষ-ক্ষরিত রক্ত-পিচ্ছিল পথে চলতে থাকে উগ্র দেশপ্রেমের নৃশংস অভিযান। হিটলারের জার্মানি এবং মুসোলিনীর ইতালি উগ্র জাতীয়তার সেই নগ্ন বীভৎস প্রকাশের মধ্যদিয়ে সেদিন বিশ্বমানবতার বক্ষে পদস্থাপনে উদ্যত হয়েছিল।
স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমঃ
স্বদেশপ্রেমের সঙ্গে বিশ্বপ্রেমের কোন অমিল নেই, কোনো সংঘাত নেই। স্বদেশপ্রেম তো বিশ্বপ্রেমেরই সংক্ষিপ্ত সংস্করণ। বলাবাহুল্য, স্বদেশ বিশ্বেরই অন্তর্ভুক্ত। স্বদেশের মধ্যস্থতায় বৃহত্তর পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে।
আমরা স্বদেশকে ভালোবেসে তার পদমূলে যে ভক্তিপূত শ্রদ্ধা নিবেদন করি, তা গিয়ে পৌঁছায় বিশ্ব স্রষ্টারই পদতলে। কাজেই বলা যায়, স্বদেশপ্রেম বিশ্বপ্রেমেরই প্রথম সোপান। স্বদেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে আমরা বিশ্বপ্রেমের জগতে উপনীত হতে পারি।
স্বদেশবাসীকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসতে পারলে আমরা বিশ্ববাসীকেও মনে প্রাণে ভালোবাসতে পারি। আবার যে স্বদেশবাসী, সে বিশ্ববাসীও বটে। স্বদেশের নদী নির্ঝর, বন-উপবন, গিরি-পর্বত, তার মানুষ এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিশ্বেরও মহা সম্পদ। কাজেই, স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমের উৎস এক ও অভিন্ন। তাদের মধ্যে কোনো সংঘাত নেই।
স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমের মধ্যে সম্পর্কঃ
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের মতে, জাতীয়তা ও স্বদেশপ্রেম যখন সংকীর্ণতার অন্ধকূপে বন্দি হয়ে উগ্র ছিন্নমস্তা রূপ ধারণ করে, তখন বিশ্বপ্রেম পদদলিত হয়। স্বদেশকে একমাত্র পরম প্রিয় মনে করে আমরা বিশ্বকে শত্রু মনে করি এবং তাকে ধ্বংস করবার জন্য ধাবিত হই।
তখন শুভ বিচার-বুদ্ধি স্বদেশপ্রেমের অন্ধ আবেগে লুপ্ত হয়। ফলে 'পরস্পর হানাহানি এবং অবারিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অনিবার্যরূপে দেখা দেয়। আর নানা মারণাস্ত্র আবিষ্করণের ফলে সেই হানাহানি অচিরেই ধারণ করে চরম বিভীষিকাময় রূপ । বিশ শতকে সংঘটিত দু'দুটি বিশ্বযুদ্ধ সেই উগ্র জাতীয়তাবাদেরই নির্মম ফলশ্রুতি।
কাজেই উগ্র জাতীয়তাবোধে কল্যাণ নেই, নেই বাঞ্ছিত জাতীয় সমৃদ্ধি। তাই রবীন্দ্রনাথ বলেছেন.......
“ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা,
তোমাতে বিশ্বময়ীর- তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।”
দেশজননী ও বিশ্বজননী এক ও অভিন্ন। কারণ, দেশজননীর বুকের ওপর বিশ্বজননীরও আঁচল পাতা। স্বদেশ এবং বিশ্ব আমাদের ঐক্য চেতনার
এপিঠ আর ওপিঠ।
স্বদেশপ্রেমের বৈশিষ্ট্যঃ
স্বদেশপ্রেম মানবচরিত্রের এক স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ যেমন দেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে, তেমনি সাহিত্য, শিল্পকলা বা অন্যান্য জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে কাজ করাও দেশপ্রেমের লক্ষণ।
তাই প্রত্যেকের কাজ হবে যার যার ক্ষেত্রে দেশের কল্যাণের কথা চিন্তা করে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করা যাতে স্বদেশের সবরকম উন্নতি সাধিত হয়। দেশপ্রেম নিজের দেশকে জানতে শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়। স্বদেশপ্রেমের মাধ্যমেই বিশ্বপ্রেমে এগিয়ে যাওয়া যায়। ফলে মানবতার মহান আদর্শের সম্প্রসারণ ঘটে।
উপসংহারঃ
স্বদেশপ্রেম মানুষের সহজাত মহৎ প্রবৃত্তি। যথার্থ দেশপ্রেমিক দেশের স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থাপন করেন না নিজের স্বার্থকে। দেশের স্বার্থে সহাস্যে আত্মবলিদান করতে পারেন তিনি।
গ্যারিবল্ডী, লেনিন, সুভাষ বসু, রানা প্রতাপ, চাঁদ সুলতানা, ওয়াশিংটন, জোয়ান অব আর্ক, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বাংলাদেশের বীরশ্রেষ্ঠগণ সেরকম দেশপ্রেমিক।
আমাদের সকলকে স্বার্থহীন দেশপ্রেমিক হতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে স্বদেশপ্রেমকে। তবেই স্বাধীন জাতির মর্যাদা নিয়ে আনন্দের সাথে বেঁচে থাকা যাবে।
আমাদের কথাঃ
আপনি স্বদেশ প্রীতি অথবা, দেশপ্রেম এই রচনাগুলোর জন্য ও স্বদেশপ্রেম এই রচনাটি পড়তে পারেন; নামের দিকে একটু ভিন্নতা হলেও ভিতরের মসলা একই। আর হ্যা এই রচনা চারটি ৯৯% নির্ভুল কারন এগুলো বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্লগার ভাইরা আপনরা এই আর্টিকেলটি কপি করলে আমাদের সাইটকে ক্রেডিট রাখবেন নয়তো কপিরাইট ক্লাইম করবো।
আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত হতে follow বাটনে ক্লিক করুন
Post a Comment
0 Comments